এম.শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার, ৩০ জানুয়ারী ॥
কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল ও সম্মেলন দীর্ঘ ১৩ বছর পর আজ ৩১ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা আ’লীগ। পুরো শহরকে অপরুপ সাজে সজ্জিত করা হয়েছে। তোরণ , ব্যানার আর পেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। সম্মেলণকে সফল ও সার্থক করতে আসছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় প্রেসিডিয়াম সদস্য, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ১১ কেন্দ্রিয় নেতা। তবে নতুন কমিটি ঘোষণা আসতে পারে ঢাকা থেকে এমন আশংকার কথা জানালেন। জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট একেএম আহমদ হোসাইন।
তিনি জানিয়েছেন, এ সম্মেলন হবে অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে। তবে সম্মেলন শেষে কাউন্সিল না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেন্দ্র থেকেই জেলা আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত কান্ডারিদের নাম ঘোষণা করা হবে। তারপরও কাউন্সিল করার সমস্ত প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে।
জেলা আওয়ামীলীগ সূত্র জানায়, ৩১ জানুয়ারী রবিবার সকাল ১০ টায় শহীদ দৌলত ময়দানে সম্মেলন আনুষ্ঠানিক শুরু হবে। এরপর একে একে ওই মঞ্চে জেলা আওয়ামী লীগকে উজ্জীবিত করতে বক্তব্য রাখবেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট ১১ জন নেতা। এভাবেই শেষ হবে প্রথম পর্বের অধিবেশন। আর দ্বিতীয় পর্বের অধিবেশন হবে সৈকতের ডায়াবেটিকস পয়েন্টের বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে।
এদিকে, ৩১ জানুয়ারি বিকালেই বিমান যোগে কক্সবাজার ত্যাগ করবেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা। থাকবেন শুধু কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ। কাউন্সিল যে মুহুর্তে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সে সময়ে চলে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ সিআইপি জানান, কেন্দ্রীয় হাই কমান্ড চাইলে নেতৃত্ব পছন্দ করে দিতে পারেন। সে ক্ষমতা তার রয়েছে। তবে তিনি চান, গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কাউন্সিলর ভোটেই নতুন কমিটি হোক।
জেলা আওয়ামীলীগের সূত্রটি আরো জানায়,জেলা আওয়ামীলীগের আওতাভুক্ত ১১ টি ইউনিটের ৩২০ জন কাউন্সিলরের তালিকা চুড়ান্ত করা হয়েছে। ভোটের জন্য ব্যালেট পেপার ও তৈরি করা হয়। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব কে পালন করবেন তা নির্ধারিত করা হয়নি। এটি কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ ঠিক করবেন বলে সুত্রটি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি একে আহমেদ হোসাইন জানান, গঠনতান্ত্রিক যদিও বা নির্বাচন কমিশনার ঠিক করার দায়িত্ব সম্মেলন প্রস্তুুতি কমিটির । তারপরও করা হয়নি। কক্সবাজার আগত অতিথিরাই নির্ধারণ করবেন নির্বাচন কমিশনারের বিষয়টি।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানিয়েছেন, নেত্রী শেখ হাসিনার কাছে কক্সবাজার জেলার সমস্ত নেতার বায়োডাটা রয়েছে। সবার সব কিছুই তিনি জানেন। এখানে কাউন্সিল হলে ভোট কেনা বেচে হতে পারে। অযোগ্যরা নেতৃত্বে চলে আসতে পারে। এজন্য নেত্রী তার পছন্দের দু‘জনকে জেলা আওয়ামীলীগের দায়িত্বভার দিতে পারেন।
জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলে অংশ নিতে আসছেন, ১১ জন কেন্দ্রিয় নেতার। তাদের মধ্যে ৪ জন মন্ত্রী এবং ৩ জন প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় প্রেসিডিয়াম সদস্য, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় সাধারণ সম্পাদক, জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
প্রধান বক্তা থাকবেন, কেন্দ্রিয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক বীর বাহার উ শৈ সিং, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ বদিউজ্জামান ভুঁইয়া ডাবলু, কেন্দ্রিয় সদস্য মির্জা আজম এমপি, সুজিত রায় নন্দী ও আমিনুল ইসলাম আমিন। সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাড. একে আহমদ হোছাইন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় থাকবেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমেদ সিআইপি।
এদিকে, গত শুক্রবার রাতে সম্মেলন উপলক্ষে বর্তমান জেলা কমিটির সর্বশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয় জেলা পরিষদ মিলনায়তনে। সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশেই যার সফল সমাপ্তি ঘটে। পরস্পর পরস্পরের প্রতি ক্ষমা চেয়ে ও কুলাকুলির মাধ্যমে আনন্দ আর কোলাহলে ইতি টানা হয় ওই সভার।
পাঠকের মতামত: